ঢাকা ০৪:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ থেকে তিন বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৩০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পঠিত

ভাদ্রের শেষভাগে এসে ‘তালপাকা গরমে’ গত কয়েক দিন জনজীবন ছিল অস্বস্তিকর। দিনভর সূর্যের তীর্যক দহনের সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যে ভ্যাপসা গরম ছিল প্রায় গোটা দেশ জুড়ে। ইতিমধ্যে সাগরে তৈরি হওয়া লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। দেশের ওপর আবারও বিস্তৃত হয়েছে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু। উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল রাতে ভারতের ওড়িশা ও পূর্ব মধ্যপ্রদেশে অবস্থান করছিল।

গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ ২৩টি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে স্বল্প বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজ বুধবার সকাল ১১টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের তিন বিভাগে আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বিশ্বের প্রধান প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপটির অবস্থান হবে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী উপকূলের ওপরে। ১৩ সেপ্টেম্বর গভীর নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপ আকারে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ওপর অবস্থান করতে পারে। ১৪ সেপ্টেম্বর এটি লঘুচাপ আকারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করতে পারে। এর ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে আগামীকাল দুপুর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলাতেও অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে, আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার মধ্যে নিম্নচাপের ফলে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার, সিলেট বিভাগে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আজ, আগামীকাল ও ১৩ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে। এর বাইরে গভীর নিম্নচাপ উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। এটি ভারতের ওড়িশার দিকে চলে যাবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে ফুঁসে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। গত রবিবার থেকে চরম অশান্ত হয়ে ওঠে সমুদ্র। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে বিভিন্ন এলাকার শত শত ফিশিং ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে। ফলে বন্ধ রয়েছে ইলিশ আহরণ।

ট্যাগস :

আজ থেকে তিন বিভাগে অতি ভারী বর্ষণের শঙ্কা

আপডেট সময় : ১২:৩০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভাদ্রের শেষভাগে এসে ‘তালপাকা গরমে’ গত কয়েক দিন জনজীবন ছিল অস্বস্তিকর। দিনভর সূর্যের তীর্যক দহনের সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যে ভ্যাপসা গরম ছিল প্রায় গোটা দেশ জুড়ে। ইতিমধ্যে সাগরে তৈরি হওয়া লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। দেশের ওপর আবারও বিস্তৃত হয়েছে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু। উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল রাতে ভারতের ওড়িশা ও পূর্ব মধ্যপ্রদেশে অবস্থান করছিল।

গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ ২৩টি জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে স্বল্প বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজ বুধবার সকাল ১১টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের তিন বিভাগে আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বিশ্বের প্রধান প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপটির অবস্থান হবে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী উপকূলের ওপরে। ১৩ সেপ্টেম্বর গভীর নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপ আকারে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ওপর অবস্থান করতে পারে। ১৪ সেপ্টেম্বর এটি লঘুচাপ আকারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করতে পারে। এর ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে আগামীকাল দুপুর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলাতেও অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে, আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার মধ্যে নিম্নচাপের ফলে চট্টগ্রাম বিভাগে ২০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার, সিলেট বিভাগে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আজ, আগামীকাল ও ১৩ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে। এর বাইরে গভীর নিম্নচাপ উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। এটি ভারতের ওড়িশার দিকে চলে যাবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে ফুঁসে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। গত রবিবার থেকে চরম অশান্ত হয়ে ওঠে সমুদ্র। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে বিভিন্ন এলাকার শত শত ফিশিং ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে। ফলে বন্ধ রয়েছে ইলিশ আহরণ।