ঢাকা ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালতে আটকে যাচ্ছে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৯ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই নির্বাচনি অঙ্গীকার পূরণে একের পর এক নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার একের পর এক নির্বাহী আদেশ সিদ্ধান্ত আদালতে আটকে যাচ্ছে। এ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে সংকটও বাড়ছে। শনিবারই মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নথিতে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন সরকারি ব্যয় সংকোচন বিভাগ ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েনসির (ডজ) প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন না।

আটকে গেছে যেসব সিদ্ধান্ত

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নথিতে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডজের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ফেডারেল বিচারক। আদালতের নথি অনুসারে, ট্রেজারি বিভাগের নথিতে থাকা লাখ লাখ আমেরিকানের ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্যে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না ডজ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শত শত বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল মঞ্জুরি ও ঋণ আটকে দেওয়ার যে আদেশ দিয়েছিলেন সেটি কার্যকর হওয়ার আগ মুহূর্তে গত মাসের শেষদিকে সাময়িকভাবে স্থগিত করেন দেশটির একজন বিচারক। এর আগে মঞ্জুরি পাচ্ছিলেন এমন ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোর একটি গ্রুপ এ বিষয়ে মামলা করেছিল। মামলায় বলা হয়, ইতিমধ্যেই অনুমোদন হওয়া তহবিল সাময়িকভাবে স্থগিত করার মাধ্যমে হোয়াইট হাউজ আইন লঙ্ঘন করেছে। আদালতের আদেশটি আসে প্রেসিডেন্টের আদেশ কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে। যদিও প্রেসিডেন্টের আদেশ কোন কোন সংস্থা বা কর্মসূচির ওপর প্রযোজ্য হবে তা নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২ হাজার ২০০ কর্মীকে বেতনসহ ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আটকে গেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সাময়িকভাবে আটকে দেন দেশটির একজন বিচারক। ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। মূলত, ইউএসএআইডি কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে এমন দুটি ইউনিয়নের দায়ের করা মামলার প্রতিক্রিয়ায় বিচারক কার্ল নিকোলস এই সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেন। সংস্থাটি বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আটকে দেওয়ার জন্য এই দুটি ইউনিয়ন চেষ্টা করছিল। এই আদেশ এক সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাত্ ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন যে, ইউএসএইড জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করছে না। তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি খরচ কমানোর জন্য অনেক সরকারি সংস্থার বাজেট কাটার চেষ্টা করছে, এর মধ্যে ইউএসএইডও রয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই বিশ্ব জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার আদেশ জারি করেন। এতে ইউএসএআইডির কার্যক্রম থমকে যায়। ফেডারেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বেচ্ছা অবসরের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেটি আদালতের সিদ্ধান্তে আটকে যায়। যদিও এর আগে ৫০ হাজার মার্কিনি স্বেচ্ছা অবসরের প্রস্তাব মেনে নেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আটকে দিয়েছে আদালত। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ডিস্ট্রিক আদালতের বিচারক দেবোরাহ বোর্ডম্যান এক রুল জারি করে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রেসিডেন্টের আদেশের ওপর প্রাথমিক স্থগিতাদেশ দেন।

প্রিন্স হ্যারিকে তাড়ানো হচ্ছে না : ট্রাম্প

নথিবিহীন অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার এই সিদ্ধান্তে প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান মার্কেলকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক সাক্ষাত্কারে ট্রাম্প জানান, ‘আমি এটা করতে চাই না। আমি তাকে একা ছেড়ে দিতে চাই। এমনিতে স্ত্রীকে নিয়ে হাজারও সমস্যায় রয়েছেন হ্যারি। কারণ, তার স্ত্রী ভয়ংকর। আমি আর নতুন করে হ্যারির সমস্যা বাড়াতে চাই না।’ ২০২০ সালে রাজপরিবার ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান হ্যারি ও মেগান। তারা ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকতে শুরু করেন। সেই সময় থেকে তার ভিসার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অভিযোগ আছে যে, মাদক সেবনসংক্রান্ত তথ্য নাকি গোপন করে ভিসার আবেন করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি। গত বছরের শুরুর দিকে এক সাক্ষাত্কারে এই বিষয়ে কথাও বলেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ক্ষমতায় এলে নিশ্চয়ই ব্রিটেনের প্রিন্সের ভিসা বিতর্কে নজর দেবেন।

ট্যাগস :

আদালতে আটকে যাচ্ছে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই নির্বাচনি অঙ্গীকার পূরণে একের পর এক নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তার একের পর এক নির্বাহী আদেশ সিদ্ধান্ত আদালতে আটকে যাচ্ছে। এ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে সংকটও বাড়ছে। শনিবারই মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নথিতে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন সরকারি ব্যয় সংকোচন বিভাগ ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েনসির (ডজ) প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন না।

আটকে গেছে যেসব সিদ্ধান্ত

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নথিতে ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডজের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ফেডারেল বিচারক। আদালতের নথি অনুসারে, ট্রেজারি বিভাগের নথিতে থাকা লাখ লাখ আমেরিকানের ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্যে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না ডজ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শত শত বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল মঞ্জুরি ও ঋণ আটকে দেওয়ার যে আদেশ দিয়েছিলেন সেটি কার্যকর হওয়ার আগ মুহূর্তে গত মাসের শেষদিকে সাময়িকভাবে স্থগিত করেন দেশটির একজন বিচারক। এর আগে মঞ্জুরি পাচ্ছিলেন এমন ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোর একটি গ্রুপ এ বিষয়ে মামলা করেছিল। মামলায় বলা হয়, ইতিমধ্যেই অনুমোদন হওয়া তহবিল সাময়িকভাবে স্থগিত করার মাধ্যমে হোয়াইট হাউজ আইন লঙ্ঘন করেছে। আদালতের আদেশটি আসে প্রেসিডেন্টের আদেশ কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে। যদিও প্রেসিডেন্টের আদেশ কোন কোন সংস্থা বা কর্মসূচির ওপর প্রযোজ্য হবে তা নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ২ হাজার ২০০ কর্মীকে বেতনসহ ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আটকে গেছে। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সাময়িকভাবে আটকে দেন দেশটির একজন বিচারক। ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। মূলত, ইউএসএআইডি কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে এমন দুটি ইউনিয়নের দায়ের করা মামলার প্রতিক্রিয়ায় বিচারক কার্ল নিকোলস এই সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেন। সংস্থাটি বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আটকে দেওয়ার জন্য এই দুটি ইউনিয়ন চেষ্টা করছিল। এই আদেশ এক সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাত্ ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছেন যে, ইউএসএইড জনগণের করের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করছে না। তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি খরচ কমানোর জন্য অনেক সরকারি সংস্থার বাজেট কাটার চেষ্টা করছে, এর মধ্যে ইউএসএইডও রয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই বিশ্ব জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার আদেশ জারি করেন। এতে ইউএসএআইডির কার্যক্রম থমকে যায়। ফেডারেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বেচ্ছা অবসরের যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেটি আদালতের সিদ্ধান্তে আটকে যায়। যদিও এর আগে ৫০ হাজার মার্কিনি স্বেচ্ছা অবসরের প্রস্তাব মেনে নেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ আটকে দিয়েছে আদালত। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ডিস্ট্রিক আদালতের বিচারক দেবোরাহ বোর্ডম্যান এক রুল জারি করে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রেসিডেন্টের আদেশের ওপর প্রাথমিক স্থগিতাদেশ দেন।

প্রিন্স হ্যারিকে তাড়ানো হচ্ছে না : ট্রাম্প

নথিবিহীন অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তার এই সিদ্ধান্তে প্রিন্স হ্যারি এবং তার স্ত্রী মেগান মার্কেলকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক সাক্ষাত্কারে ট্রাম্প জানান, ‘আমি এটা করতে চাই না। আমি তাকে একা ছেড়ে দিতে চাই। এমনিতে স্ত্রীকে নিয়ে হাজারও সমস্যায় রয়েছেন হ্যারি। কারণ, তার স্ত্রী ভয়ংকর। আমি আর নতুন করে হ্যারির সমস্যা বাড়াতে চাই না।’ ২০২০ সালে রাজপরিবার ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান হ্যারি ও মেগান। তারা ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকতে শুরু করেন। সেই সময় থেকে তার ভিসার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অভিযোগ আছে যে, মাদক সেবনসংক্রান্ত তথ্য নাকি গোপন করে ভিসার আবেন করেছিলেন প্রিন্স হ্যারি। গত বছরের শুরুর দিকে এক সাক্ষাত্কারে এই বিষয়ে কথাও বলেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ক্ষমতায় এলে নিশ্চয়ই ব্রিটেনের প্রিন্সের ভিসা বিতর্কে নজর দেবেন।