চলনবিলে ‘বাউত উৎসবে’ মেতেছেন শৌখিন মাছশিকারিরা

- আপডেট সময় : ১০:৫০:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০ বার পঠিত
কুয়াশাঢাকা ভোরের হিমেল হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। এর মধ্যেই চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া এলাকায় ঐতিহ্যবাহী ‘বাউত উৎসবে’ মেতে ওঠেছেন শৌখিন মাছশিকারিরা। এ উৎসবকে অনেকে ‘পলো উৎসব’ নামেও চেনেন।
শনিবার (২ নভেম্বর) হেমন্তের কাকডাকা ভোরে পলো, বেসাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ নিয়ে দূর-দূরান্তের শৌখিন মাছশিকারিরা হাজির হয়ে যান চলনবিলে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লোকজ রীতিতে হই-হুল্লোড়ে বিলের জলে মনের আনন্দে চলে মাছ শিকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলনবিলে এ উৎসবে ১১টি বাস, সাতটি ট্রাক ও চারটি পিকআপে চেপে এসে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মাছশিকারি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একসঙ্গে মৎস্য শিকার করে। তাদের হাতে ছিল পলো, চাক পলো, নোট পলো, ঠেলাজাল, বাদাই জাল, লাঠিজালসহ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম। বিলপাড়ে সমবেত হওয়ার পর একসঙ্গে বিলে নেমে মাছ ধর’র আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ।
চলনবিলে মাছ ধরতে আসা বাউত উৎসবের মাছশিকারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি প্রায় আট বছর ধরে মাছ শিকার করি। প্রতি বছর শখের বসে মাছ শিকারের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাই। এখানে অনেক আনন্দ হয়। মাছ কেউ পাই আর না পাই, বাউতের একটা উৎসব হয়। এজন্যই আমরা আসি।’
পবনাপুর এলাকার আব্দুল কাদের বলেন, ‘বহু পুরোনো কাল থেকে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে মাছ শিকারের জন্য পলোর ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই আমরা চলনবিলে মাছ শিকার করতে এসেছি।’
জানা গেছে, নাটোরের সিংড়া, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, নাটোরের বনারপাড়া এলাকার প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন মাছশিকারি আসে চলনবিলে বাউত উৎসবে যোগ দিতে।
চলনবিল পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ফোরামের সভাপতি এস এম রাজু আহমেদ জানান, দল বেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মাছশিকারিদের ডাকা হয় বাউত, তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ।