ঢাকা ০১:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

চাঁদা আদায়ের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:২২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৬ বার পঠিত

গাজীপুরের টঙ্গী বাজার খেয়া ঘাটে জোরপূর্বক মাঝিদের উচ্ছেদ, খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, দোকান থেকে চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত স্থানীয় ‘প্রভাবশালী’ ও আওয়ামী লীগ নেতা টুটুল সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।

শনিবার রাত নয়টার দিকে খেয়া ঘাটের আইচি ঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রোববার সকালে তাকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেন এক ব্যাক্তি।

মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তুরাগ নদের টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটে প্রায় ৩০ বছর ধরে নৌকা চালাতেন ৬০ জন মাঝি। সেই আয় দিয়েই সংসার চালাতেন তারা। এর মধ্যে হঠাৎ তাদের জীবনে কালো ছায়া হয়ে আসেন টুটুল সরকার। তিনি ঘাটের ইজারা পেয়ে গত ১ জুলাইথেকে সব নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নিজ ব্যবস্থাপনায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নামিয়ে মানুষ পারাপার শুরু করেন। এতে কাজ হারিয়ে বেকায়দায় পড়েন মাঝিরা।

এ ছাড়া নদী পারাপারে সরকার নির্ধারিত ভাড়া দুই টাকা হলেও টুটুল সরকার দাপট দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করছিলেন। পাশাপাশি নদের পাড়ের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন।

টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ জানায়, গতকাল রাতে খেয়া ঘাটের দক্ষিণ পাড়ে (আইচি ঘাট) ছিলেন টুটুল সরকার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর আশকোনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য। সেখান থেকে টুটুল সরকারকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। পরে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার তাকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আরিফুর রহমান খান নামের এক ব্যাক্তি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কায়সার আহমদের ভাষ্য, খেয়া ঘাট নিয়ে টুটুল সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। এর মাঝে নির্দিষ্ট করে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন আরিফুর রহমান খান নামের তার পূর্বপরিচিত একজন। ঘাটের ইজারার টাকা নিয়ে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব ছিল। আমরা এরই মধ্যে টুটুল সরকারকে আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি।

টুটুল সরকার স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্টজন ছিলেন। পাশাপাশি তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকারে ভাতিজা। এসব কারণে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব খাটাতেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

ট্যাগস :

চাঁদা আদায়ের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ১১:২২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের টঙ্গী বাজার খেয়া ঘাটে জোরপূর্বক মাঝিদের উচ্ছেদ, খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, দোকান থেকে চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত স্থানীয় ‘প্রভাবশালী’ ও আওয়ামী লীগ নেতা টুটুল সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।

শনিবার রাত নয়টার দিকে খেয়া ঘাটের আইচি ঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রোববার সকালে তাকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেন এক ব্যাক্তি।

মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তুরাগ নদের টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটে প্রায় ৩০ বছর ধরে নৌকা চালাতেন ৬০ জন মাঝি। সেই আয় দিয়েই সংসার চালাতেন তারা। এর মধ্যে হঠাৎ তাদের জীবনে কালো ছায়া হয়ে আসেন টুটুল সরকার। তিনি ঘাটের ইজারা পেয়ে গত ১ জুলাইথেকে সব নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নিজ ব্যবস্থাপনায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নামিয়ে মানুষ পারাপার শুরু করেন। এতে কাজ হারিয়ে বেকায়দায় পড়েন মাঝিরা।

এ ছাড়া নদী পারাপারে সরকার নির্ধারিত ভাড়া দুই টাকা হলেও টুটুল সরকার দাপট দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করছিলেন। পাশাপাশি নদের পাড়ের দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন।

টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ জানায়, গতকাল রাতে খেয়া ঘাটের দক্ষিণ পাড়ে (আইচি ঘাট) ছিলেন টুটুল সরকার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর আশকোনা ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য। সেখান থেকে টুটুল সরকারকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। পরে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার তাকে টঙ্গী পূর্ব থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আরিফুর রহমান খান নামের এক ব্যাক্তি চাঁদাবাজীর মামলা দায়ের করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কায়সার আহমদের ভাষ্য, খেয়া ঘাট নিয়ে টুটুল সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। এর মাঝে নির্দিষ্ট করে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন আরিফুর রহমান খান নামের তার পূর্বপরিচিত একজন। ঘাটের ইজারার টাকা নিয়ে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব ছিল। আমরা এরই মধ্যে টুটুল সরকারকে আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি।

টুটুল সরকার স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্টজন ছিলেন। পাশাপাশি তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকারে ভাতিজা। এসব কারণে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব খাটাতেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।