ঢাকাস্থ গৌরনদী আগৈলঝাড়া সমিতির সাতকাহন

- আপডেট সময় : ১০:৪৪:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৪৩ বার পঠিত
সংগঠনের একক সভাপতি একজন সরকারি কর্মকর্তা ! ১৬ বছর পেশি শক্তির বলে থাকা একক ও আজীবন সভাপতি তিনি। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না । নানা অনিয়ম অপকর্ম দুর্নীতি ও নীতিহীন কাজ করে বেশ আলোচনায় এসেছেন তিনি । তার নাম সৈয়দ জিয়াউল হক নবু । তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা । বর্তমানে অবসরে । ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পরেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে !
কে এই নবু ? আর সমিতি আদতে কি ?
গৌরনদীর নাঠৈ গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম সৈয়দ মতলেবুর রহমান মধু মীর সাহেবের ছেলে সৈয়দ জিয়াউল হক নবু, বাংলাদেশ টেলিফোন টিএন্ডটি তে ঢাকায় চাকুরি করতেন, সেসুবাদে তিনি শাহজাহানপুর টিএন্ডটি কলোনীতে সরকারি বাসায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন, অবসরে এসেও ওই সরকারি কোয়াটারেই অবৈধভাবে বসবাস করছেন !
ওই কোয়াটারে তার স্ত্রী হোমিও চেম্বার বানিয়ে চিকিৎসাও করছেন স্ত্রীর নাম কাজী শিউলী, এছাড়া তিনি স্ত্রীকে প্রকাশক ও সম্পাদক করে “মাসিক বরিশাল পরিক্রমা ” নামে একটি পত্রিকা বের করেন সরকারি চাকুরি থাকাবস্থায় ই।
বরিশাল ১ আসনের দুটি উপজেলা গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া , এই দুটি উপজেলার নামে তাদের পছন্দের কিছু লোকজন (যারা ঢাকায় থাকেন ব্যবসা ও চাকুরি করেন) তাদের নিয়ে”ঢাকাস্থ গৌরনদী আগৈলঝাড় সমিতি” নামে নিজস্ব ও পকেটস্থ সমিতি গঠন করেন ,যার প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সভাপতি একজনই, তার নাম সৈয়দ জিয়াউল হক নবু! আজও পর্যন্ত কোনো নীতিমালায় আনেন নি,সমিতির নির্বাচন করান নি, অন্য কোনো সদস্যরা সভাপতি হতে পারেন নি !
সদস্যদের থেকে চাদা তুলে নানা আয়োজন করেন, খাবার দাবার নাচ গান অনুষ্ঠান করেন, নিজের প্রতিষ্ঠিত মাসিক বরিশাল পরিক্রমা পত্রিকায় ব্যাসায়ীদের থেকে বিজ্ঞপণ আদায় করেন।
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে ও ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য হন তখন তাকে প্রধান অতিথি করেন, নিজেদের মধ্যের ছেলে মেয়ে বৃত্তি পেলে তাদের সম্বর্ধনা দেন। এছাড়া গৌরনদী আগৈলঝাড়ার লাখো অসহায় দু:স্ত গরীব কোনো মানুষকে সাহায্য করার নজির পাওয়া যায় নি ।
যদি কোনো সদস্য এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তো তাকে বরখাস্ত বহিস্কার করেন, তাই কোনো সদস্য সৈয়দ নবুর বিরুদ্ধে টু টা আ অ শব্দ টুকুও করেন নি । আওয়ামীলীগ পরিবার ও আওয়ামীলীগ করার কারনে নবুর হাত ছিল নাকি অনেক লম্বা, টিএন্ডটির চাকুরি করা কালীন তার বিরুদ্ধেও অনেক দুর্নিতী ও অনিয়মেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে, ওপড় মহলের হাত ও তার ভাইর অঢেল অর্থের কাছে সবাই ছিল নিরব , বকশিষ নিয়েই খুশি থেকেছেন তদন্তে আসা কর্মকর্তারা ।
নোভো টাওয়ারের কয়েকজন কর্মচারি ও কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সৈয়দ নবু সাহেবের ভাই মিজানুর রহমান দিনু , তিনি ঢাকার প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী ও নোভো টাওয়ারের মালিক। তারই মালিকানাধীন নোভো টাওয়ার এর একটি ফ্লাট ব্যবহার করেন সমিতির কার্যালয় হিসাবে ।
সুত্র জানায়, ওই টাওয়ারের ছাদে প্রায়ই পার্টির আয়োজন হয় এবং ওখানে হোটেল বার রেস্টুরেন্ট রয়েছে, সেটা কতটা বৈধ ? প্রশ্ন করা হলে তারা অপারগতা প্রকাশ কেনে । এবিষয়ে রাজউক এর কর্মকর্তারা বলতে পারবেন বলে জানান।
ঢাকার নোভো টাওয়ারে অবস্থিত “ঢাকাস্থ গৌরনদী আগৈলঝাড়া সমিতি” র কার্যক্রম নিয়ে আওয়ামীলীগ আমলে টিএম তুহিন নামে জনৈক রিপোর্টার লেখা লিখেন ।
সেই লেখার পরিপেক্ষিতে সেই রিপোর্টারকে হুমকি দেন,হাত পা ভেঙ্গে পুলিশে দিবেন ও তার প্রাণ নাশের হুমকি দেন কথিত সেই সভাপতি সৈয়দ জিয়াউল হক নবু!
সাংবাদিক টি এম তুহিন এই প্রতিবেদকে বলেন, ওই সমিতির একজন সদস্য সৈয়দ জিয়াউর রহমান শিমুল তাকে নিয়ে নোভো টাওয়ারে গিয়েছিলেন, গিয়ে দেখেন ওই দিন সমিতির মিটিং, সমিতির আজীবন একক সভাপতি সৈয়দ নবু সাহেব আমার পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে আমাকে মারার জন্য উদ্যাত হয়, এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন, তিনি উচু কন্ঠে গোল টেবিলে বসা শতাধিক সদস্যদের সম্মুখে সৈয়দ নবু দাড়িয়ে এ হুমকি প্রদান করেন ! যার স্বাক্ষী সেদিন উপস্থিত সদস্যরা । কোনো সদস্যই সেদিন এর প্রতিবাদ করে নি, বরং আমাকে অনেকে সৈয়দ নবুর সাথে তাল মিলিয়ে তিরস্কার করেন, আমাকে চেয়ারে বসতেও দেয় নি ! অপমান করে তাড়িয়ে দেন নবু
অভিযোগের বিষয়ে সৈয়দ জিয়াউল হক নবুর মুঠো ফোনে ফোন করা হলে মুঠো ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি ।
টি এম তুহিন এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান ।