তামা সালামকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি

- আপডেট সময় : ১০:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ৩৮ বার পঠিত
রাজধানীর ধোলাইখালের আ’লীগ নেতা তামা সালামকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে কোটিপতি হওয়ার রহস্য উদঘাটন করা দরকার!
প্রতিবেদন মোনায়েম মন্ডলঃ রাজধানী ঢাকার ধোলাইখাল এলাকার গডফাদার ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা তামা সালাম বর্তমানে এলাকায় প্রকাশ্যে বহাল তবিয়তে চলাফেরা করছে। মাত্র ২৪/২৫ বছরের ব্যবধানে তার শুন্য থেকে কোটিপতি হওয়ার রহস্যাবৃত ঘটনা এলাকার সচেতন জনমণে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। তাই তারা দরবেশ বাবা খ্যাত সালমান এফ রহমানের সহযোগি ও দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ধোলাইখাল এলাকার ত্রাস, সন্ত্রাসী তামা সালামকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতারাতি গড়ে ওঠা কোটিপতি হওয়ার মুল রহস্য উদঘাটনে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রকাশ, ১৯৯৪/১৯৯৫ ইং সালে ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মাঝিরচর বিলাশপুর গ্রামের আবুল হাসেম ও হালিমা খাতুনের পুত্র দরিদ্র দিন মজুর আব্দুস সালাম পেটের তাগিদে ঢাকা শহরের ধোলাইখাল এলাকায় আসেন। এ সময় তার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা চলছিল। তার ঢাকার বর্তমান ঠিকানা ১৬৭/১ লাল মোহন সাহা স্সীট ওয়ারী ঢাকা।
তৎকালীন সময় থেকে ধোলাইখাল এলাকায় বসবাসকারী বেশ কয়েক জন সচেতন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের স্মৃতি চারণ করে জানান, এ সময় উল্লেখিত টোকাই সালাম ধোলাইখাল এলাকার বিভিন্ন দোকান থেকে তামা চুরি করে করে রজনীবোস লেনে তা এনে বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার পরিচালনা করতেন। ১৯৯৮ইং সালে ধোলাইখাল এলাকায় সে একটি তামা গলানোর কারখানা স্থাপন করেন। এরপর আস্তে আস্তে উল্লেখিত ওই চুরির তামার গায়ে বিআরবিসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার করে নবাবপুর এলাকার বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দিতে শুরু করেন। এ সময় তার নামের সাথে তামা যুক্ত হয়ে তার নাম “তামা সালাম” হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তারা বলেন- তখন তামা সালাম বললে তাকে এক নামে সবাই চিনতে পারে। এরপর থেকে থেমে নেই তার উন্নয়নের পারদের মাত্রা। তরতর করে উপরে উঠতে থাকে উন্নয়নের পারদ। অল্প দিনের মধ্যে হয় কোটিপতি। এ সময়ে পরিচয় হয় দরবেশ বাবা খ্যাত সালমান এফ রহমানের সাথে। তার আশীর্বাদ পেতে এক নম্বর ডোনার হয়ে যান ফ্যাসিষ্ট আ’লীগের। এলাকায় সহ দলের পিছনে খরচ করেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। আর বাগিয়ে নেন দোহার থানা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতির পদ।
তারা আরো জানান, দলীয় পদ পাওয়ার পর তৎকালীন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও তার হাতের পুতুল হয়ে যায়। ফলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সারা বাংলাদেশে বিস্তার করেন চুরি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের শ্রেষ্ঠ নেটওয়ার্ক। যত ধরনের ট্রান্সফরমার চুরি হয় এবং নষ্ট হয় সব ধরনের ট্রান্সফরমার তার তত্বাবধানে চলে আসে। নিজের নাম পরিবর্তন করে লোকজনের কাছে পরিচিত হন আবদুস সালাম চৌধুরী। একই সাথে আওয়ামী লীগের একজন বড় ডোনার হিসেবে পরিচিতি পান এই তামা সালাম।
সুত্র জানায়, দিন যতই যাচ্ছে ততই ক্ষমতার অংশ হিসেবে তার বিভিন্ন সেক্টরে একের পর এক দলীয় প্রভাব বিস্তার হতে থাকে। এলাকায় তিনি গড়ে তোলেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনীর লিডার সেজে খাস জমি দখলসহ এমন কোন কাজ নেই সে করেনি বা করতে পারে না। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময়ে তার প্রভাব এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, সমুহ বিপদের ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। বর্তমানেও একই অবস্থা বিরাজমান রয়েছে। সে এখন দলীয় প্রভাব বাদ দিয়ে নিজের অর্থনৈতিক বলয়ে বলিয়ান হওয়া প্রভাব প্রতিপত্তির দাপটে প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করছেনা!
নির্ভরশীল আরেকটি সুত্র জানায়, এই আব্দুস সালাম চৌধুরী ওরফে তামা সালাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সময় প্রতিবাদকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে আন্দোলনে বাধা প্রদান করেন। শুধু তাই নয়, এই তামা সালাম দরবেশ বাবা খ্যাত সালমান এফ রহমানের বিশ্বস্ত সহযোগী হয়ে ধোলাইখাল ও দোহার উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন।
তাই এলাকার ত্রাস আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি “আব্দুস সালাম চৌধুরী ওরফে “তামা সালাম” কে জরুরি ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার বা কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার রহস্যাবৃত ঘটনা উদঘাটন করা দরকার বলে এলাকার সচেতন মহল মতামত ব্যক্ত করেছেন।