ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবীজির জীবনাচারে নম্রতা ও কোমলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:২৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৪ বার পঠিত

বিনয় ও নম্রতা মানব চরিত্রের মহৎ গুণ। অনন্য এই গুণের মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায়। শত্রুকেও মুহূর্তে কাছে টানা যায় একটুখানি কোমলতার মাধ্যমে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন চারিত্রিক সব বৈশিষ্ট্যের আধার।

তাঁর বিনয় ও নম্রতার কয়েকটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করছি।

ঘরের কাজে সহযোগিতা

সাহাবি আসওয়াদ (রা.) বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সা.) ঘরে থাকা অবস্থায় কী করতেন? তিনি বলেন, ঘরের কাজকর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ পরিবারবর্গের সহায়তা করতেন। আর নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য চলে যেতেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৭৬)

 

নাগরিকদের সঙ্গে নম্রতা

রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব অর্জনের পরের ঘটনা। আবু মাস‌উদ (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এলো। তিনি লোকটির সঙ্গে কথা বললেন। এ সময় তার কাঁধের গোশত (ভয়ে) কাঁপছিল।

তিনি তাকে বলেন, তুমি শান্ত হও, স্বাভাবিক হও। কারণ আমি কোনো রাজা-বাদশাহ নই, বরং আমি শুকনা গোশত খেয়ে জীবনধারিণী এক নারীর পুত্র। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩১২)

অন্যের মন্দ আচরণে হাসিমুখ

আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, একবার আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে পথে চলছিলাম। তখন তিনি নাজরানে প্রস্তুত মোটা পাড়ের চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। এক বেদুইন তাঁকে পেয়ে খুব জোরে চাদর টান দিল।

অবশেষে আমি দেখলাম, জোরে টানার কারণে রাসুল (সা.)-এর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। অতঃপর বেদুইন বলল, ‘আল্লাহর যে সম্পদ আপনার কাছে আছে, তা থেকে আমাকে কিছু দেওয়ার আদেশ দিন।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন, আর তাকে কিছু দেওয়ার আদেশ দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩১৪৯)

অসহায়ের প্রতি সদয় আচরণ

অসহায় অভাবীর প্রতি নবীজির ভালোবাসা ছিল অতুলনীয়। আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) অসহায়-দুর্বলদের সঙ্গে গিয়ে তাদের প্রয়োজন পূরণ করে দিতেও অস্বীকৃতি জানাতেন না (এবং একে নিজের জন্য অসম্মানের মনে করতেন না)।

(আলমুজামুল কাবির, তবারানি, হাদিস : ৮১০৩)

সেবকের সঙ্গে নবীজির কোমলতা

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ১০ বছর রাসুল (সা.)-এর সেবা করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উহ্ শব্দটি করেননি। এ কথা জিজ্ঞেস করেননি, তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না? (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৮)

ট্যাগস :

নবীজির জীবনাচারে নম্রতা ও কোমলতা

আপডেট সময় : ১১:২৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিনয় ও নম্রতা মানব চরিত্রের মহৎ গুণ। অনন্য এই গুণের মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায়। শত্রুকেও মুহূর্তে কাছে টানা যায় একটুখানি কোমলতার মাধ্যমে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন চারিত্রিক সব বৈশিষ্ট্যের আধার।

তাঁর বিনয় ও নম্রতার কয়েকটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করছি।

ঘরের কাজে সহযোগিতা

সাহাবি আসওয়াদ (রা.) বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সা.) ঘরে থাকা অবস্থায় কী করতেন? তিনি বলেন, ঘরের কাজকর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ পরিবারবর্গের সহায়তা করতেন। আর নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য চলে যেতেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৭৬)

 

নাগরিকদের সঙ্গে নম্রতা

রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব অর্জনের পরের ঘটনা। আবু মাস‌উদ (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এলো। তিনি লোকটির সঙ্গে কথা বললেন। এ সময় তার কাঁধের গোশত (ভয়ে) কাঁপছিল।

তিনি তাকে বলেন, তুমি শান্ত হও, স্বাভাবিক হও। কারণ আমি কোনো রাজা-বাদশাহ নই, বরং আমি শুকনা গোশত খেয়ে জীবনধারিণী এক নারীর পুত্র। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩১২)

অন্যের মন্দ আচরণে হাসিমুখ

আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, একবার আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে পথে চলছিলাম। তখন তিনি নাজরানে প্রস্তুত মোটা পাড়ের চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। এক বেদুইন তাঁকে পেয়ে খুব জোরে চাদর টান দিল।

অবশেষে আমি দেখলাম, জোরে টানার কারণে রাসুল (সা.)-এর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। অতঃপর বেদুইন বলল, ‘আল্লাহর যে সম্পদ আপনার কাছে আছে, তা থেকে আমাকে কিছু দেওয়ার আদেশ দিন।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলেন, আর তাকে কিছু দেওয়ার আদেশ দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩১৪৯)

অসহায়ের প্রতি সদয় আচরণ

অসহায় অভাবীর প্রতি নবীজির ভালোবাসা ছিল অতুলনীয়। আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) অসহায়-দুর্বলদের সঙ্গে গিয়ে তাদের প্রয়োজন পূরণ করে দিতেও অস্বীকৃতি জানাতেন না (এবং একে নিজের জন্য অসম্মানের মনে করতেন না)।

(আলমুজামুল কাবির, তবারানি, হাদিস : ৮১০৩)

সেবকের সঙ্গে নবীজির কোমলতা

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ১০ বছর রাসুল (সা.)-এর সেবা করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উহ্ শব্দটি করেননি। এ কথা জিজ্ঞেস করেননি, তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না? (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৮)