পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে রুটে যান চলাচল বন্ধ
- আপডেট সময় : ১২:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭ বার পঠিত
পরিবহন শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে গাড়ি বন্ধ রেখে চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকায় বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের দাবি, অতিরিক্ত চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় পরিবহন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. মুসা অবৈধ শ্রমিক লেলিয়ে প্রকৃত শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে। তাদের এক সিনিয়র ড্রাইভার ভাইকে মেরেছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন শ্রমিকরা।
বিক্ষুব্ধ কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনার মতো সেক্রেটারি মুসা আমাদের রক্ত চুষে খেয়েছে। একটা লোকাল বাস চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গেলে কক্সবাজার পর্যন্ত যেতে ১ হাজার ৬৮০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। তারা আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের মতো নানান সংগঠনের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে।
তারা আরও বলেন, এর প্রতিবাদ জানাতে গেলে আমাদের ওপর হামলা হয়। আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, পরিবহন সংগঠনের নামে এসব চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের ওপর হামলা বন্ধ করতে হবে। এ সেক্টরের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের এক সমন্বয়ক বলেন, সেক্রেটারি মুসা নির্বাচন ছাড়াই গত ১৭ বছর আমাদের রক্ত চুষে খেয়েছে। এখন সে অবৈধভাবে চাঁদাবাজি করতে চাচ্ছে। আমরা আর সেটা হতে দিব না। তাদের নির্যাতনে গত ১৭ বছরে এ পর্যন্ত ৮ হাজার শ্রমিক এ পেশা ছেড়ে চলে গেছে। আমরা এ স্বৈরাচার আর চাই না।
অন্যদিকে, সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। অফিসগামী মানুষরা পড়েছেন বেশি ভোগান্তিতে। হঠাৎ করে গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘোষণায় কর্মব্যস্ততায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
যাত্রীরা জানান, সকাল থেকেই রোদে পুড়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। কেউ কেউ ছোট গাড়ি চালালে সেসব গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
১৬ দিনেও হয়নি কুষ্টিয়ার নতুন ডিসির পদায়ন
কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসক পদায়ন এগুচ্ছে না। গত ২০ আগস্ট কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজাকে বদলিপূর্বক পদায়ন করা হয় শিল্প মন্ত্রণালয়ে। পরে ২৪ আগস্ট তিনি কুষ্টিয়া ছেড়ে গেছেন। এরপর ১৬ দিন পার হলেও পদায়ন করা হয়নি নতুন ডিসি। এতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দাপ্তরিক কর্ম তৎপরতায় গতি কমেছে অনেকটা।
জানা যায়, বদলিজনিত কারণে কুষ্টিয়ার ডিসি পদ শূন্য হওয়ায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব পান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আখতার। এছাড়া সরকার পরিবর্তনের পর জারিকৃত সরকারি পরিপত্রে সারা দেশের পৌরসভার মেয়রদের বাতিল ঘোষণার পর কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বেও রয়েছেন ওই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। ফলে নিজ দপ্তরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক ও পৌরসভা প্রশাসকের দায়িত্বের কারণে একই কর্মকর্তার উপর পড়েছে অতিরিক্ত কাজের চাপ। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক পদায়নে লিস্ট তৈরির কথা শোনা গেলেও কুষ্টিয়ায় এখনো পদায়ন হয়নি নতুন ডিসি। এতে জেলা প্রশাসক দপ্তরের কর্ম চাঞ্চল্যতা ও গতিহ্রাস পেয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনকে বদলি করা হলে তিনিও কুষ্টিয়া ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে জেলার পুলিশ বিভাগেও বিরাজ করছে ঢিলেঢালা অবস্থা। সরকার পরিবর্তনের পর পুলিশ কাজে ফিরলেও তাদের কার্যক্রম ও দায়িত্ব পালনে এখনো গা-ছাড়া ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অপরদিকে ডিসিশূন্য অবস্থায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের দাপ্তরিক কাজ-কর্ম চলছে মন্থর গতিতে। এছাড়া ডিসি পদায়ন না হওয়ায় অধস্তন কর্মকর্তারা রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণে এগুচ্ছেন না। বলা বাহুল্য যে, জেলার প্রশাসনিক স্তরে সরকারের মুখপাত্র হিসাবে ডিসিরা পালন করেন মুখ্য ভূমিকা।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার জানান, সরকার পতনের পর প্রতিটি দপ্তরেই বিরাজ করছে একটু ধীরগতি। কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসক পদায়ন ঝুলে থাকায় প্রশাসনিক-দাপ্তরিক কাজ-কর্মেও বিরাজ করছে বেশ ঢিলেঢালা অবস্থা। শিগগির নতুন ডিসি পদায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: শারমিন আখতার জানান, কুষ্টিয়ায় নতুন জেলা প্রশাসক পদায়নের কোন খবর তার জানা নেই। তবে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে তিনি সচেষ্ট রয়েছেন বলে জানান।