ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্টা, ৬ জন গ্রেপ্তার

প্রতিবেদন: মো. হানিফ সরদার,
  • আপডেট সময় : ০৮:১২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ১৮১ বার পঠিত

বরিশাল

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চর শরিকল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ওয়ারিশদের জমি ভুয়া এনআইডি তৈরি করে বিক্রির চেষ্টাকালে এক প্রতারককে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, একাধিক প্রতারক একটি শক্তিশালী চক্রের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে ঢাকার তুরাগ থানার রানা ভোলা মৌজার ১১১১ নম্বর দাগে প্রায় ৪ একর জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। জমিটির প্রকৃত মালিক ছিলেন মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদার। মৃত্যুর পর তার চার ছেলে—মো. সেলিম, জাহাঙ্গীর, আলমগীর ও বুলবুল হাওলাদার জমির ওয়ারিশ হন।

চক্রটি প্রভাবশালী একটি পক্ষের সহায়তায় সেলিম হাওলাদারের নামে জাল এনআইডি তৈরি করে। তারা ৫৫ কোটি টাকায় জমিটি বিক্রির চেষ্টা করে এবং ৫ কোটি টাকার টোকেন মানি গ্রহণের জন্য ঢাকার মগবাজারে একটি হোটেলে ক্রেতা আব্দুল মালেকের সঙ্গে দেখা করতে আসে।

এ সময় প্রকৃত মালিকের ভাই আলমগীর হাওলাদার উপস্থিত হয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাচাই-বাছাই শেষে ভুয়া মালিক সেজে আসা প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। পরে রমনা থানায় মামলা দায়ের হয় (মামলা নং ২৬(১২)২০)।

তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রতারক ‘সেলিম হাওলাদার’-এর আসল পরিচয় মো. মোতালেব শিকদার, যার পিতার নাম মান্নান শিকদার এবং বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামে। তার জন্মতারিখ ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৫ এবং এনআইডি নম্বর ৪৬৫৫৪৭০৭৩২।

আলমগীর হাওলাদারের আবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে দেখা যায়, প্রকৃত ওয়ারিশদের এনআইডি সঠিক থাকলেও প্রতারকেরটি জাল। এনআইডি সৃষ্টিতে নির্বাচন কমিশনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়টি পিবিআই তদন্ত করছে।

এই প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোতালেব শিকদার, পিয়ার হোসেন, নাছির হোসেন, সূর্য্য মিয়া সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অপরদিকে মহিবুল হাসান, হাবিবুর রহমান পান্না, লিয়াকত আলী সরকার প্রমুখের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। জানা গেছে, এসব ব্যক্তি জাল এনআইডি, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ও দলিল তৈরি করে ঝামেলাপূর্ণ জমিগুলো বিক্রির সিন্ডিকেট চালায়।

উল্লেখ্য, মামলার অন্তর্ভুক্ত জমিটি তুরাগ থানার হরিরামপুর এলাকায় অবস্থিত এবং এটি নিয়ে পূর্বেও মামলা চলমান রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ট্যাগস :

ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্টা, ৬ জন গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৮:১২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

বরিশাল

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চর শরিকল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ওয়ারিশদের জমি ভুয়া এনআইডি তৈরি করে বিক্রির চেষ্টাকালে এক প্রতারককে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, একাধিক প্রতারক একটি শক্তিশালী চক্রের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে ঢাকার তুরাগ থানার রানা ভোলা মৌজার ১১১১ নম্বর দাগে প্রায় ৪ একর জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়। জমিটির প্রকৃত মালিক ছিলেন মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদার। মৃত্যুর পর তার চার ছেলে—মো. সেলিম, জাহাঙ্গীর, আলমগীর ও বুলবুল হাওলাদার জমির ওয়ারিশ হন।

চক্রটি প্রভাবশালী একটি পক্ষের সহায়তায় সেলিম হাওলাদারের নামে জাল এনআইডি তৈরি করে। তারা ৫৫ কোটি টাকায় জমিটি বিক্রির চেষ্টা করে এবং ৫ কোটি টাকার টোকেন মানি গ্রহণের জন্য ঢাকার মগবাজারে একটি হোটেলে ক্রেতা আব্দুল মালেকের সঙ্গে দেখা করতে আসে।

এ সময় প্রকৃত মালিকের ভাই আলমগীর হাওলাদার উপস্থিত হয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাচাই-বাছাই শেষে ভুয়া মালিক সেজে আসা প্রতারককে গ্রেপ্তার করে। পরে রমনা থানায় মামলা দায়ের হয় (মামলা নং ২৬(১২)২০)।

তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রতারক ‘সেলিম হাওলাদার’-এর আসল পরিচয় মো. মোতালেব শিকদার, যার পিতার নাম মান্নান শিকদার এবং বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামে। তার জন্মতারিখ ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৫ এবং এনআইডি নম্বর ৪৬৫৫৪৭০৭৩২।

আলমগীর হাওলাদারের আবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে দেখা যায়, প্রকৃত ওয়ারিশদের এনআইডি সঠিক থাকলেও প্রতারকেরটি জাল। এনআইডি সৃষ্টিতে নির্বাচন কমিশনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়টি পিবিআই তদন্ত করছে।

এই প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোতালেব শিকদার, পিয়ার হোসেন, নাছির হোসেন, সূর্য্য মিয়া সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অপরদিকে মহিবুল হাসান, হাবিবুর রহমান পান্না, লিয়াকত আলী সরকার প্রমুখের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। জানা গেছে, এসব ব্যক্তি জাল এনআইডি, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ও দলিল তৈরি করে ঝামেলাপূর্ণ জমিগুলো বিক্রির সিন্ডিকেট চালায়।

উল্লেখ্য, মামলার অন্তর্ভুক্ত জমিটি তুরাগ থানার হরিরামপুর এলাকায় অবস্থিত এবং এটি নিয়ে পূর্বেও মামলা চলমান রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।