সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ কালকিনির জমিদারবাড়ি

- আপডেট সময় : ১০:২৫:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৪ বার পঠিত
সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে মাদারীপুরের কালকিনির প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো জমিদারবাড়ি। এক সময় শত শত লোকের কোলাহল থাকলেও কালের বিবর্তনে আজ নিস্তব্ধ। পুরোনো ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে বাড়িটি। কোথাও কোথাও খসে পড়েছে দেওয়ালের পলেস্তারা, ভেঙে পড়েছে ছাদও। এছাড়া দেওয়ালে জন্মেছে পরগাছা। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বাড়িটি। বহু আগেই জমিদারবাড়ির মঠগুলো ও প্রধান ফটকের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। এখনো যা কিছু আছে, তা সে সময়ের নিদর্শন ও ঐতিহ্য বহন করলেও যেন কেউ দেখার নেই। তাই স্থানীয়রা ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে প্রশাসনের কাছে দাবি তুলেছেন।
জমিদারের চতুর্থ বংশধর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার পূর্বে সিডি খান ইউনিয়নের ঢাঁকিকান্দি গ্রামে এ জমিদারবাড়ি অবস্থিত। তৎকালীন জমিদার রামমোহন মণ্ডলের আমলে এ বাড়িটি নির্মিত হয়। জমিদারের চতুর্থ বংশধরদের তথ্য থেকে জানা যায় যে, ১৮০০ শত (১৫ একর) জমির ওপরে তাদের পূর্বপুরুষ জমিদার রামমোহন মণ্ডল এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়ির চারিদিকে ছিল দেওয়ালে ঘেরা, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি মঠও ছিল। বাড়ির ভেতরে প্রবেশের জন্য ছিল প্রধান একটি মূল ফটক। জমিদারবাড়িটি ২০০ বছরের পুরোনো হওয়ায় সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংসের কিনারে এসে পৌঁছেছে জমিদারবাড়িটি।
বাড়িটিতে ছিল বিচারালয়, কাচারিঘর ও জলসাঘর। প্রধান ফটকটি বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই। দৃশ্যমান শুধু পরিত্যক্ত বাড়িটিই। যদি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার না হয় তাহলে যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে মাটিতে। চিরদিনের জন্য হারিয়ে যেতে পারে ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করা এ জমিদারবাড়িটি। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কালের নিদর্শন ঐতিহ্য হিসেবে দ্রুত সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জানায় জমিদারের চতুর্থ বংশধরেরা ও স্থানীয় লোকজন।
জমিদারের চতুর্থ বংশধর পলাশ মণ্ডল ও রমেশ মণ্ডল জানান, এখানে জলসাঘর ছিল, কাচারিঘর ছিল, বিচারঘর ছিল। সব হারিয়ে গেছে। কিছুই অবশিষ্ট নেই শুধু বাড়িটি ছাড়া। এক সময় এখানে প্রতি বছর দোল উৎসব হতো। এখন বাড়িটি যদি সরকার রক্ষা করত তাতেই আমরা খুশি হতাম। তারা আরো জানান, বাড়িটি দেখতে অনেক দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থী আসেন। বাড়িটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় পুলিন, কৃষ্ণ, কুদ্দুস ও কাওসার হোসেন বলেন, এ জমিদারবাড়ি আমাদের এলাকার ইতিহাস ও সম্মান। এটা সরকারি বা বেসরকারি যেভাবেই হোক রক্ষা করা উচিত। বাড়িটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা চাই সরকারিভাবে দ্রুত জমিদারবাড়িটি সংস্কার করা হোক। এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, বাড়িটির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নিদর্শন ধরে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন শিগগিরই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।