সাব: রেজিস্টার কুদ্দুস আলাদিনের চেরাগের পেয়েছেন,গড়েছেন অঢেল সম্পদ কাড়ি কাড়ি টাকার পাহাড়
অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তি আর কালো টাকার পাহাড় গড়েছেন ধনকুবের এই কর্মকর্তা বর্তমানে পিরোজপুর সদর সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আলাদিনের চেরাগের ন্যায় পাওয়া চাকরিতে কুদ্দুস হাওলাদার ইতোমধ্যে ঘুরিয়েছেন নিজের ভাগ্যের চাকা। নিজ গ্রাম এলাকায় গড়েছেন পাহাড়সম সম্পদ। নামে-বেনামে ক্রয় করেছেন কমপক্ষে ২৫ একর সম্পত্তি।
রাজধানী ঢাকা এবং বরিশাল নগরীতে রয়েছে তার একাধিক আলিসান বহুতল ভবন ও ফ্ল্যাট। সম্প্রতি তার অবৈধ টাকার উত্তাপে নিজ এলাকার বাসিন্দারা হয়ে উঠেছেন অতিষ্ঠ। যার প্রেক্ষিতে কুদ্দুছ হাওলাদারের বিরুদ্ধে তার গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দারা দূর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বলছিলাম বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার। পেশায় তিনি একজন সাব রেজিস্ট্রার।
সূত্রে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের মৃত কাশেম হাওলাদারের ছেলে কুদ্দস হাওলাদার। তার নিজ গ্রামের বাহেরঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাশ করেছেন। এরপর থেকে তাকে কেউ আর লেখাপড়া করতে দেখেননি। অথচ পরবর্তীতে তিনি হয়েছেন একজন সাব রেজিস্ট্রার। স্থানীয়দের দাবি, কুদ্দুছ হাওলাদার মুজিবনগরের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট এবং শিক্ষাগত জাল সনদ দিয়ে ওই চাকরি নিয়েছেন?
আরও জানা গেছে , কুদ্দুছ হাওলাদার অবৈধ টাকার প্রভাবে নিজ বাড়ি লাগোয়া বাহেরঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২ একর জমি আত্মসাত করে জোরপূর্বক ভোগ দখল করছেন। যা নিয়ে কুদ্দুস হাওলাদার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া চাকরি জীবনের শুরু থেকেই কুদ্দুছ হাওলাদার ব্যাপকভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে ছিলেন। তিনি যেসব জেলায় কাজ করেছেন সবখানে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। জমির মূল্য কম দেখিয়ে ও জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল করা, খারিজ ছাড়াই দলিল সম্পাদন, সরকারি খাসজমি ব্যক্তিগত সম্পত্তি দেখিয়ে বিক্রিতে সহযোগিতা করাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আদায়কৃত টাকায় তিনি এখনও সম্পদের পাহাড় গড়ে চলেছেন। টাকা ছাড়া কুদ্দুছ হাওলাদার কোন কাজ করতেন না বলে তার প্রত্যেক কর্মস্থানেই কুখ্যাতি রয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, কুদ্দুছ হাওলাদার তার বর্তমান কর্মস্থলেও ঘুষ ছাড়া একটি ছোট কাজও করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘুষ না পেলে দলিল তিনি দিনের পর দিন ফেলে রাখেন। ফলে দলিল গ্রহীতারা সার্টিফায়েড কপি পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হন। এছাড়া দাতা ও গ্রহীতা এবং দলিল লেখকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কুদ্দুছ প্রায়ই দুর্ব্যবহার করেন। সব সময় তিনি কর্কশ ভাষায় কথা বলেন।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুদ্দুস হাওলাদার যেখানেই চাকরি করেছেন সেখান থেকেই তিনি অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ঘুষ লেনদেন, দালালের দৌরাত্ম্য, জমির শ্রেণি পরিবর্তনের নামে রাজস্ব ফাঁকি ও জমি রেজিস্ট্রেশনের নামে অবৈধভাবে বিভিন্ন ফি আদায়সহ রয়েছে অজস্র অভিযোগ।
মাদারীপুরের কালকিনিতে সাব রেজিস্ট্রার থাকা অবস্থায় গৌরনদীর সাংবাদিক তুহিনের চাচা শশুর খাঞাজাপুর গ্রামের সৌদী প্রবাসী নুর মোহাম্মাদ হাওলাদার এর জমি রেস্ট্রি না করে ,সিল স্বাক্ষর না করে ভুয়া দলিল সম্পাদন দেখিয়ে রশিদ দেন। ওই রশিদ নিয়ে দলিল গ্রহন করতে গেলে খোজ নিয়ে দেখা যায় দলিল ই হয় নি! অথচ দাশল গ্রহনের রশিদ প্রদান করেছিলেন ! এ নিয়ে অনেক দেন দরবার হলে জোড় পূর্বক রশিদ নিয়ে নেয় তার লালিত গুন্ডা কাহিনী দিয়ে। এসব অভিযোগে ২০১৮ সালের ৭ জুন রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সেবা নিয়ে ফলোআপ গণশুনানি সেবাগ্রহীতাদের তোপের মুখে পড়েছিলেন তৎকালীন ঢাকা জেলা সদরের সাব-রেজিস্ট্রার এই কুদ্দুস হাওলাদার। ওই গণশুনানিতে রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা গাজী শহিদুল্লাহ নামের একজন ভুক্তভোগী সাব-রেজিস্ট্রার কুদ্দুসের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলেছিলেন। যার ভিত্তিতে কুদ্দুস হাওলাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা দিয়েছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন। চলমান