চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি তুলার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে সিভিল ডিফেন্স, সেনা, নৌ, বিমান ও বিজিবি’র ২২টি ইউনিট। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দমকলের মাধ্যমে পানি দিয়েও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। আশপাশের গ্রামে যে পুকুরগুলো ছিল তাও সেচ হয়ে গেছে। আগুন নেভাতে এখন বিকল্প পানির সন্ধানে নেমেছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ছোট কুমিরার হিঙ্গরিপাড়ায় দুই একর জায়গা জুড়ে ইউনিটেক্সের তুলার গুদামের টিনের চালায় ওয়েল্ডিংয়ের মেশিন দিয়ে সংস্কার কাজ করার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা পুরো গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে। এক টানা নয় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে না পারায় পরে রাতে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিট, নৌবাহিনীর চারটি ইউনিট ও বিমান বাহিনীর দু’টি ইউনিট সহ মোট ১৮টি ইউনিট এক যোগে কাজ শুরু করে। পরে বিজিবির চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিটও যোগ দেয়।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
এদিকে এ ঘটনা তদন্তে স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছেন। গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর ডিআইজি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিটিএমসি প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদফতর প্রতিনিধি, বিটিএমইএ প্রতিনিধি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শনিবার রাত ১১টার দিকে তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, তুলার গোডাউনে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এবং পানির সঙ্কটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণে ঠিক কত সময় লাগবে এখনো তার কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারছিল না ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাত যত বেড়েছে আগুনের তীব্রতাও তত বেড়েছে। লাখ লাখ টন পানি ঢালার পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় আমরা হতবাক হয়েছি। এ গুদামের পাশে তিনটি গ্রাম রয়েছে। গ্রামবাসীরা রাত জেগে তাদের বাড়িঘর পাহারায় ছিলেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।’