স্মৃতিমেদুর লাহোর

- আপডেট সময় : ১০:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ ৬৪ বার পঠিত
সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘হীরামান্ডি’ নেটফ্লিক্সে যারা দেখেছেন, দেশভাগের আগে প্রাচীরবেষ্টিত লোহপুর ও লোহারপুর হয়ে লাহোর হয়ে ওঠা এই ঐতিহাসিক শহর সম্পর্কে তারা ঈষৎ ধারণা পেয়ে গেছেন। পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম শহর সম্পর্কে বলা হয়, যারা লাহোর দেখেনি তারা দুনিয়া দেখেনি। লাহোরে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে।
১৬৪১-৪২-এ মোগল সম্রাট শাহজাহান নির্মিত শালিমারবাগ, ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন বাজার বিখ্যাত আনারকলি মার্কেট এবং নৈশভোজের জন্য ফুডকোর্ট। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর শহরের লিবার্টি চক থেকে কয়েকশ গজ দূরে গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। যার পূর্বের নাম লাহোর স্টেডিয়াম।
বুঝতেই পারছেন, প্রয়াত লিবীয় নেতা মুয়াম্মর গাদ্দাফির নামে লাল ইটের এই স্টেডিয়াম। যার নির্মাণ ব্যয়ভার পুরোটাই বহন করেছিলেন তিনি।
লাহোরের দিন শুরু হয় লিবার্টি চক দিয়ে। সকালের নাশতায় লাহোরিদের নিহারি-তন্দুরি চাই। সকালে বাসা থেকে ছোট ছেলেমেয়েদের হোটেলে নিয়ে গিয়ে নাশতা করান বাবা। ঘিয়ে মাখানো তন্দুরির সঙ্গে ধনেপাতার সুঘ্রাণে গরম বুটের ডাল ও কিমায় উদোরপূর্তি হয় লাহোরিদের। রকমারি খাবারের সমাহার সকাল-সন্ধ্যায়-রাতে ভোজনরসিকদের জিভে জল এনে দেয়। মৌতাত ছড়ায়।
দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের স্বর্ণযুগে সুখ্যাতি লাভ করা লাহোরকে ‘মোগলদের উদ্যান’ কিংবা ‘উদ্যানের নগরী’ নামেও ডাকা হতো।
শের-শায়েরি (কবিতা আবৃত্তি), সাহিত্যের সুধাপান, বিশাল পাঠাগার, শিখদের বৈশাখী উৎসব পালন, ভোজনবিলাস ও ফ্যাশনের জন্য বিখ্যাত লাহোর নগরীর হৃৎপিণ্ডে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের দ্বারোদ্ঘাটন হয় ১৯৫৯ এ। সেখানেই বাংলাদেশ আজ শুরু করবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
২০০৩ এ দ্বিতীয়বার পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ। স্মৃতিমেদুর সেই সফরে তিন টেস্ট ও পাঁচটি ওডিআই’র সবকটিতে হেরেছিল হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ। ঘটনাবহুল সেই সফরে পেশোয়ার টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন অলক কাপালি। গাদ্দাফিতে তৃতীয় ওডিআই দেখতে এসেছিল সেসময় ক্লাস সিক্সে পড়া এক সেনা কর্মকর্তার ছেলে হামজা আলমগীর। শোয়েব আখতার ও খালেদ মাহমুদের বোলিং নিয়ে টিপ্পনী কেটেছিল।
ক্রিকেট নিয়ে তার জ্ঞান যুগপৎ বিস্মিত ও বিমোহিত করত। হামজা বলেছিল, ক্রিকেট তার প্যাশন। কিন্তু বড় হয়ে সে ক্রিকেটার হবে না। হবে বিজ্ঞানী। আজ কী গাদ্দাফিতে থাকবে ফাস্ট বোলিংয়ের ভক্ত হামজা!