বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
Logo তাহারা কি আই‌নের উ‌র্দ্ধে ? ফ‌রিদুল মোস্তফা Logo কালকিনি (মাদারীপুর) উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী খাসেরহাট সৈয়দ আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান -২০২৪ অনুষ্ঠিত Logo মাদারীপুর ৩ আসনের এমপি মোছাম্মৎ তাহমিনা বেগমের আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের সাথে ঈদ পরবর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময় Logo মাদারীপুরের কালকিনির রমজানপুর ইউনিয়নে “আব্দুর রব তালুকদার -মাহমুদা বেগম ফাউন্ডেশন” এর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ Logo ঢাকাসহ ৭ অঞ্চলে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস Logo বাড়ি ফিরছে মানুষ, ফাঁকা হচ্ছে ঢাকা Logo গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর হারাল মিয়ানমার জান্তা, বাঁচলো আত্মসমর্পণ করে Logo ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় Logo আমিরাতে সোমবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার আহ্বান Logo ঈদের আগে বাড়লো মুরগির দাম

খন্দকার মাহবুুব হোসেন আর নেই

এখনই সময় ডেস্ক / ১৩৭
আপডেট : শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:২৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বারবার নির্বাচিত সফল সভাপতি, সাবেক এটর্নি জেনারেল খন্দকার মাহবুব হোসেন ইন্তেকাল করেছেন । ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন!

খন্দকার মাহবুব হোসেনের বর্ণাঢ্য জীবন: কিছু স্মৃতি
.খন্দকার মাহবুবের প্রাথমিক শিক্ষা জীবন কাটে বরগুনায়। এরপর উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে চলে আসেন নারায়ণগঞ্জে। ওঠেন খান সাহেব ওসমান আলীর পরিবারে। ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভাষা আন্দোলনে সারা দেশ তখন উত্তাল। প্রতিদিন শহরের অলিগলিতে মিছিল হয়। ভাষার প্রতি আবেগ সংবরণ করতে পারেননি উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র খন্দকার মাহবুব হোসেন। যোগ দেন ওই প্রতিবাদী মিছিলে। মিছিল থেকেই পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর তিন রাত কাটান নারায়ণগঞ্জ থানাহাজতে। ছাত্রাবস্থায় প্রথম ভোগ করেন হাজতবাস। ওই স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী নটর ডেম কলেজে। তখনই জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। এতে পড়াশোনায় গ্যাপ পড়ে যায়। দুবছর পর আইএসসি পরীক্ষা দেন। ১৯৫৮ সালে পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি নির্বাচিত হন। তখন সামরিক শাসক আইয়ুব খানের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করেন। ১০-১২ জন সহপাঠীর সঙ্গে ফের গ্রেপ্তার হন তিনি। তাদের বিচার শুরু হয় সামরিক আদালতে। নিজেই বিচারের মোকাবিলা করেন সাহসী তরুণ মাহবুব হোসেন। বিচারককে ছুড়ে দেন আইনি চ্যালেঞ্জ। ঘাবড়ে যান বিচারক। উর্দু ভাল বলতে পারার কারণে কিছুটা আনুকূল্যও পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের পরিচয় পেয়ে তাকে খালাস দেন বিচারক। তবে ছাত্রনেতা হওয়ার কারণে আইয়ুব খান তাকে এমএ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি। তাই ১৯৬৪ সালে ল’ পাস করে আইন পেশা শুরু করেন। তখন থেকেই রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতাদের মামলা পরিচালনা করেন তিনি। ৬৬ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপথ্যে থেকে সহায়তা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ৭১ সালের মার্চের মাঝামাঝিতে হাইকোর্টে আইনজীবীদের একটি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হলো বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন দেয়ার। তখন তিনিও চাইছিলেন কিছু একটা করার। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানসহ আইনজীবীদের নিয়ে জেলা কোর্টে একটি সমাবেশের আয়োজন করেন। ওই সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বক্তব্য দেন তরুণ আইনজীবী মাহবুব হোসেন। পরদিন অবজারভার পত্রিকার প্রথম পাতায় তার ছবি প্রকাশিত হয়। ওই ছবি নিয়ে গোয়েন্দারা তল্লাশি শুরু করেন। তখন ওয়ারীর হেয়ার স্ট্রিট রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই বাসায় থাকতেন প্রয়াত জিল্লুর রহমান ও আইভি রহমান। ২৫শে মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর ওই বাসা থেকে তাদের নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যান তিনি। শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। তখন মুক্তিযোদ্ধারা তার ওই বাসাকে অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করতেন। আলমারিতে রাখা মোটা আইনি বইয়ের পেছনে লুকিয়ে রাখতেন গ্রেনেড। একদিন গ্রেনেড বহনকারী এক মুক্তিযোদ্ধা এসে বললেন, তাকে কবি জসীমউদ্দীনের কমলাপুরের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ওই বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। নিজের ট্রাম্প গাড়িতে করে রওনা দেয়ামাত্রই পাক সেনারা তাদের গতিরোধ করে। পাক সেনাদের বোকা বানিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন তিনি। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আদালতের চিফ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয়া হয় খন্দকার মাহবুব হোসেনকে। তরুণ বয়সে এতবড় দায়িত্ব পেয়ে ভড়কে যান তিনি। ছুটে যান তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কাছে। কামাল হোসেন তাকে জানান, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না, আপনি বঙ্গবন্ধুর কাছে যান। বঙ্গবন্ধু তাকে পিঠ চাপড়ে অভয় দেন। এরপর থেকে সবুর খান, শাহ আজিজুর রহমান, ফজলুল কাদের চৌধুরীসহ প্রভাবশালী সব রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করেন। এদিকে ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার শ্যালক হওয়ায় ‘জাতীয় শ্যালকের’ পরিচিতি পান। মানিক মিয়ার কলাম লেখায় তিনি সহযোগিতা করেছেন। মানিক মিয়া নিজ হাতে লিখতেন না। প্রায় দিনই দুপুরের পর বাসায় খাটে শুয়ে থাকতেন। ইত্তেফাক থেকে লোক আসতো। তিনি যা বলতেন সেটা নোট করা হতো। যেদিন ইত্তেফাক থেকে লোক আসতো না সেদিন মাহবুব হোসেনকে ডাকতেন। খাটে শুয়ে মানিক মিয়া বলতেন আর তিনি লিখতেন। তবে বানান ভুল করলেই তার বকা খেতেন। কিংবদন্তি ওই সম্পাদকের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মানিক মিয়ার লেখায় ম্যাজিক ছিল। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে লিখে তাকে আবার ফোন দিতেন। রাজনীতির সেই সংস্কৃতি এখন আর নেই। আইনজীবী জীবনের অনেকটা সময় বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে কাটিয়েছেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তিনি বলেন, বিশাল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার পর তিনি বাঙালি জাতিকে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন। দেশে বিভাজন চাননি। কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে মুক্তিযুদ্ধ করেনি সে বিতর্কে না গিয়ে বঙ্গবন্ধু


এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

Theme Customized By Theme Park BD