বাজার বেসামাল

মুখে আমাদের শুধুই সততার বুলি। প্রতিবার রমজান এলেই আমরা নিজেদের সাজাই বাহ্যিক নতুন এক রূপ তসবিহ, আতর,আর ধুপ ধুরস্ত সাদা পোশাকে আহাহা সাদা মনের মানুষ দেখলেই মনটা ভরে যায় ছোঁয়ায় ভেসে যায় অন্তর।আমাদের আভিজাত্যের পরিচয় আমরা পাইকারি মহাজন, সিন্ডিকেট কারবারি।

প্রতিবার রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের প্রতিনিয়ত লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আসলে কি বলবেন? এগুলো দেখার কি কেউ নেই? আর নির্দিষ্টভাবে একজনকে কতই বা দায়ী করবেন?
হ্যাঁ করণীয় তো অবশ্যই আছে, তবে সেটা আপনাকে আর আমাকেই দেখতে হবে। না দেখবে প্রশাসন না দেখবে বিভাগীয় মনিটরিং কমিটি বা সমাজ প্রতিনিধি। তাদেরকে যদি দেখতে দেয়া হয় তাদের দেখা মানে ঘন্টা বাজিয়ে বাজারে প্রবেশ আর সামনে গুটিকতক ব্যবসায়ীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেই কুড়িয়ে নিবেন বাহ বাহ। শেষ দায়িত্ব, শেষ ছবি পোস্ট করা, আর বাসায় গিয়ে পরিবারের সামনে টিভিতে দাঁত কেলানো বিজয়ের হাসি।

কোন লাভ নেই। মরবো আর মরবেন, বাঁচবো আর বাঁচবেন, আর পূর্ণ দায়িত্ব আপনাকে আর আমাকেই নিতে হবে।
কিছুদিন দেখলাম গরুর মাংস কান্ড, এ যেন এক ভাইরাল কাণ্ড কে কাকে ভাইরাল করবে, অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সব ঠিকভাবেই চলছে ঠকে যাচ্ছি আমরা।
আমরা বাঙালি আমরা লড়তে জানি। তবে সেটা কৃষকের বিরুদ্ধে।
উত্তরাঞ্চলের সবজি পাইকারি বাজারে চরম ধস। অথচ আমরা যখন কিনছি তখন ৬০/ ৭০/৮০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই। কোথায় আছি একটু সহনশীলতা বলবেন? কাঁচা বাজার, মুদি রকমারি, মাছ, মাংস, ইফতার পণ্য।
শুধু চেঁচালেই প্রতিবাদ হয় না। নিরবেও প্রতিবাদ হয় তবে সেটা হতে হবে সবাইকে।

নিরব এক রক্তচোষার সন্ধান এবার
কি অবাক হচ্ছেন?
হ্যাঁ পাশ্চাত্য আদলে নামিদামি ব্রান্ড শোরুম এর আদলে এক ভয়ংকর আগ্রাসন।
আমরা আসলে মিথ্যে আতিথেয়তা আর এসির ঠান্ডা বাতাস রঙিন আলোর ঝলকানিতে খুব অভিভূত হয়ে যাই।
এ যেন এক রূপকথার জাদু বাক্স, এখানে ৫৩০ টাকার প্রস্তুত খরচের পাঞ্জাবি পে যায় ৩৫৯০+ ভ্যাট, ৪৮৫ টাকা প্রস্তুত খরচের শার্ট হয়ে যায় ২৯৫০+ ভ্যাট, ৩৩৭ টাকা খরচের পোলো শার্ট ১৬৯০ +ভ্যাট। ওয়াও।।।।।
ঈদ বা কোন ধর্মীয় উৎসব এলেই এরা এতটাই ক্ষুদ্র হয়ে যায় যা কল্পনাঅতীত।
ব্যবসাকে হালাল রাখুন। সহনীয় পর্যায় আপনাকে প্রশান্তিসহ মানবিক ইন্দ্রিয় সজাগ রাখবে।
হয়তো ভাবছেন লুটপাট আর জুলুমের সাম্রাজ্য আপনাকে দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে? মোটেই না একটা বিষয় মনে রাখা জরুরী প্রতিটি ক্ষেত্রে God revenge বলে একটা চরম সত্য লুকিয়ে আছে, শুধু ও পারেই নয় এপারেই জবাব দিয়ে যেতে হবে আপনাকে। পৃথিবী প্রতিটি হিসাব আপনার আমার কাছ থেকে কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেবে, এখানে কোন টেলিফোন, পেশী শক্তি কিংবা আভিজাত্যের অহংকার, পোশাকি পরিচয় কোন কিছুর তোয়াক্কা চলবে না।
তাই তৈরি থাকি এতদিন পৃথিবী থেকে যা শুষে নিয়েছি ফেরত দিতে হবে পৃথিবীকে সেটা হোক ভালো কিংবা হোক মন্দ।

জয় হোক মানবতার
সৈয়দ মিজানুর রহমান
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন।